বর্তমান প্রতিযোগিতার পৃথিবী তে কারিগরি শিক্ষা কোনো ব্যক্তির জন্য এক বিশাল সম্পদ। ঠিক তেমনিভাবে, কোনো জাতি যদি তার জনবল কে জনশক্তি তে রুপান্তর করতে পারে এবং কারিগরি শিক্ষা এর সঠিক, স্থির ও সুচিন্তিত প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারে তবে সে জাতির উন্নতি অনেকটা সুনিশ্চিত যার উদাহরণ হিসেবে পৃথিবীর ১ নম্বর অর্থনৈতিক দেশ চীন আমাদের সামনে মূর্তিমান। তাই বাংলাদেশ সরকার ও স্বাধীনতার প্রাক্ক্বাল থেকে কারিগরি শিক্ষার উপর জোড় দিতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তৈরী করেছে পলিটেকনিক কলেজ, টেকনিক্যাল কলেজ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় গুলো।

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট:

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটটি রাজশাহীর একটি প্রাচীন সরকারি বহুমুখী কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটটি কে সংক্ষিপ্তে র.প.আই বলে। ১৯৬৩ সালে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা গ্রহনের উদ্দেশ্যে রাজশাহীর সপুরাতে ১৪.৬৯ একর জমির উপর ১৬ লক্ষ টাকা ব্যায়ে রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাস এ মোট ৬ টি ভবন সহ বিশালাকার মাঠ সমৃদ্ধ।

এ প্রতিষ্ঠান এর শিক্ষার্থী দের পাঠদান সক্রিয় এবং কার্যকর রাখার উদ্দেশ্যে, বিভিন্ন বিষয়ে পৃথক পৃথক সিলেবাস এ পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়ে থাকে। জাতীয় কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এর সিলেবাস নির্ধারণ করে থাকে।এ প্রতিষ্ঠানে ৪ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স করার সুবিধা রয়েছে।কারিগরি শিক্ষার পাশাপাশি প্রত্যেকটি ছাত্র-ছাত্রীদের অন্যান্য বিষয়ে যেমন- বাংলা, ইংরেজি, গণিত, পদার্থ, রসায়ন, ব্যবস্থাপনা, সমাজ বিজ্ঞান, শারীরিক শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে পাঠদানের জন্য একটি অকারিগরি শিক্ষা বিভাগ রয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার জন্য সকালে ও দুপুরে দু’টি করে শিফটে পাঠদানের ব্যবস্থা রয়েছে।

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী দের আবাসস্থল এর প্রয়োজন মেটাতে রয়েছে ২ টি ছাত্রাবাস এবং ১ টি ছাত্রীনিবাস। তবে পরিতাপের বিষয় এই যে, হল সংখ্যা এবং হলের আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ার কারণে, তা শিক্ষার্থী দের প্রয়োজন মেটাতে পারছে না। কর্তৃপক্ষ ও এ বিষয়ে বেশ উদাসীন যার প্রমাণ মেলে এখনো এর জন্য কোনো পদক্ষেপ না নেওয়াতে।
প্রতি বছর এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর দেশের সরকারি পলিটেকনিক গুলোতে এক সাথে অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করে। লিখিত পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর ও এসএসসি পরীক্ষার প্রাপ্ত স্কোরের সমম্বয়ে এ ফল প্রণীত হয়। অনলাইনে ভর্তি ফর্ম পূরণের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন বিভাগ ও পলিটেকনিক পছন্দের সুযোগ থাকে। মেধা ও পছন্দের ভিত্তিতে বিভাগ ও ইন্সটিটিউট নির্বাচন করা হয়। এভাবে প্রতি বছর রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে প্রথম ও দ্বিতীয় শিফটে বিভিন্ন বিভাগে নির্ধারিত আসন সংখ্যা অনুযায়ী ৭৬৮ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়ে থাকে।

নিম্মোক্ত বিষয়গুলোর অধীনে রাজশাহী পলওটেকনিল ইনস্টিটিউট এ শিক্ষা দান কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে-

  • কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগ
  • পুরকৌশল (সিভিল) বিভাগ
  • তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগ
  • ইলেকট্রনিক্স প্রকৌশল বিভাগ
  • যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগ
  • শক্তি প্রকৌশল বিভাগ
  • ইলেক্ট্রোমেডিকেল প্রকৌশল বিভাগ
  • মেকাট্রনিক্স প্রকৌশল বিভাগ
  • মেকানিক্যাল প্রকৌশল বিভাগ

রাজশাহী পলিটিকাল ইন্সটিটিউট একটি সরকারী বহুমুখী কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ টি রাজশাহী জেলার সার্বিক শিক্ষা উন্নয়নে গুরুতপুর্ণ ভুমিকা পালন করে চলেছে। ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্টা লাভ করা রাজশাহী শহর এর এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ এর কারিগরি শিক্ষা উন্নয়ন এর পাশাপাশি যোগ্য ছাত্র তৈরী করে যাচ্ছে যারা দেশের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় পর্যায় ছাড়াও দেশের বাইরে এর সুনাম ছড়িয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার এর কারিগরি শিক্ষা এর উপর জোড়ারপের ফলে আশা করাই যায় যে, অদূরভবিষ্যৎ এ রাজশাহী শহরের একমাত্র এ সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট টির সকল আবাসিক এবং কারিকুলাম গত সমস্যা গুলোর সমাধান হবে পাশাপাশি আরো এগিয়ে যাবে এবং দেশের উন্নতি তে ভূমিকা রাখবে।

Source Link1