মো: মনসুর আলী ( জানু: ১৬, ১৯৭৫) বাংলাদেশের একটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত একজন ক্যাপ্টেন ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর এ জেলহত্যার ফলে নিহত জাতীয় ৪ নেতার মধ্যে একজন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী কালীন সময়ে, অপরিসীম দেশপ্রেম এবং দেশের প্রতি তার অবদান এর কথা চিন্তা করে, তার সম্মানার্থে পার্ক এর নামকরণ করা হয়েছে তাঁর নামে।
রাজশাহী শহরের অন্যতম প্রধাণ আকর্ষণ ও বিনোদন কেন্দ্র শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী পার্ক। সরকারি সহায়তায় নির্মাণ করা হয় পার্ক টি। দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর যাবৎ চলে এর নির্মাণ কার্যক্রম। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এ পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু করে ১৯৭৮ সালে। ১৯৯৫ সালে এসে শেষ হয় এর নির্মাণ কাজ এবং জনগণের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হয়। প্রায় সাড়ে সাত একর জায়গার উপর অবস্থিত এ পার্ক টি নির্মাণ করতে সরকার এর খরচ হয় প্রায় সাড়ে চব্বিশ লক্ষ্য টাকা। পদ্মা আাবাসিক এলাকার পাশে অবস্থিত এ পার্ক জনসাধারণ এর জন্য সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত অবমুক্ত রাখা হয়। তবে যথাযথ পরিচর্যার অভাবে, আজ এ পার্ক এর সৌন্দর্য হুমকির মুখে।
রাজশাহী শহর এর ঐতিহ্যবাহী এ পার্কটি মূলত শিশু কিশোরদের জন্য নির্মিত হলেও, তা সকল বয়সের মানুষের জন্য বিনোদন এর উপযুক্ত মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারতো। ভেতরের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ এর পর জানা যায়, শিশু কিশোরদের জন্য তৈরী রাইডগুলোর বেহাল অবস্থা। একমাত্র পুকুর টি ও পরিচর্যার অভাবে ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। চারপাশে নোংরা আবর্জনা ও আগাছায় পরিপূর্ণ। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার প্রমাণ মেলে অবকাঠামো এর দিকে আলোকপাত করলে। পার্কটির সার্বিক দেখভাল এর দায়িত্বে আছে মাত্র ৬ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। কিন্তু পরিতাপ এর বিষয় এই যে, যে কয়জন ও বা কর্মী নিযুক্ত আছে, তারাও দায়িত্বের অবহেলা করে আসছে। নেই কোনো নিয়ম শৃঙ্খলা। রাজশাহী নগরীর ভদ্রায় ৫ বিঘা জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এ পার্কে আছে-
- বি জেট
- মিনি ট্রেন
- ওয়াটার রাইড
- ফ্লাওয়ার কাপ
- ম্যানুয়াল রাইড
- ওয়ান্ডার কাপ
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৫ বছর যাবৎ এ বেহাল দশা পার্কটির। মাত্র নামে মাত্র ১০ টাকা প্রবেশ ফি। তবুও নেই কোনো দর্শনার্থীর ভিড়। এ বিষয়ে দর্শনার্থী দের অভিযোগ এই যে, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে ভেতরে পরিবার নিয়ে যাবার মত নেই কোনো অবস্থা। কর্তৃপক্ষর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জানা যায় য, পার্ক টি দেয়া হয় ইজারা। ইজারা গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর গাফেলতির কারণে এ অবস্থা। ইজারাদার কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করতে গেলে জানা যায় যে, দর্শনার্থী দের ভীড় না থাকায় নেই কোনো আয়। যার ফলে, দেখভাল করার জন্য অতিরিক্ত লোক নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয় না।
তবে, সাম্প্রতিককালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দর্শকদের টানতে এবং পার্কটির হারানো জৌলুশ ফিরিয়ে আনতে সংস্কার কাজ শুরু করা হয়েছে। দেয়ালে এবং মূল ফটক এর চারপাশে ও পরিচ্ছন্ন ও রং এর কাজ করার পাশাপাশি, ভেতরের রাইডগুলো সংস্কার এর কাজে হাত দেয়া হয়েছে। তবে বাজেট সল্পতার কারনে কাজ চলছে ধীরগতিতে।
কর্তৃপক্ষের সজাগ দৃষ্টি এবং মনোযোগ ই পারে পার্কটির হারানো সৌন্দর্য পুনরায় ফিরিয়ে আনতে। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা গুলোর এগিয়ে আসা ও প্রয়োজন ব্যস্ত নগরীর মানুষের এক মুহূর্তের মানসিক প্রশান্তির জন্য। পাশাপাশি এলাকাবাসীর উদ্যোগ ও হতে পারে যথাযথ এক উদাহরণ।
তবে একটি কথা পরিশেষে বলতে হবে, আমাদের নগরী, একে ঠিক রাখাটাও আমাদের দায়িত্ব।
Source Link1