ইসলাম প্রচারে যুগে যুগে বাংলার মাটিতে পদধুলি পড়েছে অনেক সাধু, আউলিয়ে, পীরের। তাদের উদারতা, মহত্ত্ব, মহানুভবতা এ দেশের মানুষকে করেছে মুগ্ধ। যার ফলশ্রুতিতে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শোষিত ও নির্যাতিত মানুষেরা দলে দলে ইসলাম এর পতাকাতলে আশ্রয় নেয়। শাহ মখদুম (রহঃ) ছিলেন ঐ সকল আউলিয়া, পীর দের মধ্যে অন্যতম। তার আগমনে উত্তরবঙ্গ বিশেষ করে রাজশাহী অঞ্চলে ইসলামের বিস্তৃতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।
পরিচিতি এবং অবস্থান:
বরপীর আব্দুর কাদের জিলানী (রহঃ) এর নাতি হযরত মখদুম শাহ (রহঃ) এর মাজার রাজশাহী এর দরগাপাড়ায় অবস্থিত। পদ্মার তীরে এবং রাজশাহী কলেজের পশ্চিম পাশে অবস্থিত এ মাজার। শাহ মখদুম (রহঃ) এর প্রকৃত নাম আব্দুল কুদ্দুস। সুদুর বাগদাদ শহর থেকে ইসলাম প্রচারের নিমিত্তে হিজরি ৬৮৫ সনে এদেশে তার আগমন ঘটে।
অবদান:
আজ রাজশাহী অঞ্চলে মুসলমান দের যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা তার পটভুমিতে শাহ মখদুম (রহঃ) এর অনবদ্য ভূমিকা রয়েছে। তার ইসলাম প্রচারের এ অবদান এর জন্যে বিভিন্ন সময়ে তিনি বিভিন্ন উপাধি তে ভুষিত হয়েছেন। ইসলাম প্রচারের এ অবদান এর জন্য ‘শাহ’, ‘মখদুম’, ‘রুপোশ’ প্রভৃতি উপাধিতে তিনি ভুষিত হন। প্রাচীন বরেন্দ্র এবং গৌড় অঞ্চলে ইসলামের ভিত কে শক্তিশালী করতে তার মুখ্য ভূমিকা রয়েছে।
শাহ মখদুম রুপোশ (রহঃ) এর মাজারের বিবরণ:
মূল সমাধিটি প্রায় ১০ ফুট দীর্ঘ এবং প্রায় ৭ ফুট প্রশস্ত। সমাধি সৌধটি বর্গাকার। ১৭ ফুট করে দীর্ঘ এবং প্রশস্ত। সমাধির পশ্চিম পাশে শাহ মখদুম (রহঃ) এর ভাতিজা শাহনূর (রহঃ) এর মাজার।
রাজশাহীতে আগমন:
শাহ মখদুম (রহঃ) বাংলাদেশের নোয়াখালিতে প্রথমে অবতরণ করেন অতঃপর সেখানে কিছুকাল অবস্থান এবং ইসলাম এর বাণী প্রচারের পর নৌ পথে রাজশাহী শহরের বাঘা উপজেলায়(বর্তমান নাম) আগমন করেন। তৎকালীন সময়ে অবশ্য এ অঞ্চলের নাম বাঘা ছিল না। শাহ মখদুম (রহঃ) এর আগমনের পরে তার নামানুসারে অত্র অঞ্চলের নাম দেয়া হয় মখদুম নগর।
পরিশেষে বলা যায়, প্রাচীন বরেন্দ্র এবং গৌড় অঞ্চলে ইসলাম প্রচারে এবং নিপীড়িত মানুষ এর পাশে দাঁড়িয়ে, তাদেরকে ইসলামের পতাকাতলে আনতে শাহ মখদুম (রহঃ) এর ভূমিকা ছিল অনবদ্য। এর জন্যে অত্যাচারী শাসক রাজাদের বিপক্ষে তাকে তিনবার যুদ্ধে ও লিপ্ত হতে হয়।
কিন্তু তিনবার ই তিনি জয়লাভ করেন এবং এ অঞ্চলে ইসলামের ঝান্ডা উঁচিয়ে ধরেন।