গত শতাব্দীর সত্তর দশক পর্যন্ত ঢাকা থেকে সড়ক পথে রাজশাহী শহরে প্রবেশের একমাত্র পথছিল তালাইমারী, রাণীনগর, রামচন্দ্রপুর হয়ে আলুপট্টি। সাহেব বাজার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় অভিমুখে যেতে রামচন্দ্রপুর মহল্লার শেষে কেদুর মোড়, এর কয়েকশ গজ পূর্ব দিকের বড় মোড়টির নাম হাদীর মোড়। এই মোড়ের পূর্ব পার্শ্ব সংলগ্ন স্থানে বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ আব্দুল হাদীর বসতবাড়ি। এই মোড়টি থেকে তিনটি রাস্তা চলে গেছে উত্তর দিকে সাধুর মোড়, পূর্ব দিকে তালাইমারী অভিমুখে এবং পশ্চিম দিকে সাহেব বাজার অভিমুখে রাস্তা চলে গেছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পূর্বে মোড়টির নাম ছিল বুধু মন্ডলের মোড়। তিনি ছিলেন এলাকার মন্ডল (স্থানীয় বিচারক এবং প্রধান) ও প্রভাবশালী ব্যাক্তি আবার অন্য দিকে আব্দুল হাদী সাহেবের পিতামহ। বাংলাদেশ স্বাধীনের পর বুধু মন্ডলের মোড়টি হাদীর মোড় হিসাবে পরিচিত হয় প্রধানত দুইটি কারণে প্রথমত, আব্দুল হাদী ছিলেন সে সময়ে রাজশাহীর অন্যতম প্রধান একজন সরকার দলীয় নেতা তার বাড়ীতে দুস্থ মানুষদের রিলিফের মাল বিতরণ হতো আবার সাধারণ মানুষ তাদের প্রয়োজনে হাদী সাহেবের দারস্থ হতেন। যেহেতু মোড়টি তার বসতবাড়ীর নিকটবর্তী তাই সাধারণ মানুষ ঠিকানা জানাতে গিয়ে মোড়টির নাম হাদীর মোড় হিসাবে নামকরন করে ফেলেন। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চালক ও কন্ডাক্টরগণ যখন বাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সোজা তালাইমারীতে থামত তখন, কন্ডাক্টরগণ পরের স্টপেজকে বোঝাতে হাদীর মোড় বলে অভিহিত করত। এভাবেই বুধু মন্ডলের মোড়টি হাদীর মোড় হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
[সূত্রঃ শহর রাজশাহীর আদিপর্ব, মাহবুব সিদ্দিকী]