আয়কর প্রদান করা নাগরিক দায়িত্বগুলোর মধ্যে অন্যতম। আয়কর সনদ বা ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (TIN) এর জন্য আবেদন প্রক্রিয়াগত দিক থেকে এটি কিছুটা জটিল ছিল, তবে ডিজিটাল যুগে এ বাস্তবতা বদলেছে। ঘরে বসেই ইন্টারনেটের সাহায্যে তা নিমিষেই করে ফেলা যায়। এই লেখাটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে টিআইএন রেজিস্ট্রেশনের একটি দিক নির্দেশনা।

অনলাইনে রেজিষ্ট্রশন করার নিয়মঃ

প্রথমে secure.incometax.gov.bd/registration এই লিংকে ক্লিক করুন। স্ক্রিনে যে পেইজটি দেখা যাবে সেখানে ইউজার (ব্যবহারকারী) নাম, পাস ওয়ার্ড, ই-মেইল আইডি, ফোন নম্বর ইত্যাদি তথ্য লেখার জন্য নির্ধরিত ঘর দেখা যাবে। তথ্যগুলো সঠিকভাবে ইনপুট করুন এবং রেজিষ্ট্রশন বাটনে ক্লিক করুন। কিছুক্ষন পর আপনার মোবাইলে একটা অ্যক্টিভিশন কোড আসবে। এবার অনলাইনে কোর্ড নম্বরটি ইনপুট করতে হবে।

যাদের টিআইএন নম্বরটা পুরনো অর্থাৎ দশ (১০) ডিজিটের তারা ‘পুনরায় নিবন্ধন’ ট্যাবে ক্লিক করে এটা পরিবর্তন করে বারো (১২) ডিজিটের করে নিতে পারবেন।

করদাতার ধরণ নির্ধারনঃ

”এ” অপশন হতে করদাতার ধরণ নির্বাচন করতে হবে। এখানে পাঁচটি অপশন থাকে।

যে সকল করদাতা বাংলাদেশী, জাতীয় পরিচয় পত্রধারী, আয়ের প্রধান উৎস ব্যক্তিগত (যেমন- বেতন, বাড়িভাড়া, পেশাগত ইত্যাদি) একমাত্র তারাই এই অপশনটি নির্বাচন করবেন।

এরপর ‘বি’ অপশন। এখানে কর দাতাকে major অথবা minor নির্বাচন করতে হয়। বয়স ১৮ বছরের বেশি হলে করদাতা major এবং ১৮ বছরের কম হলে করদাতা minor অপশন সিলেক্ট করবেন।

নিবন্ধনের ধরণঃ

এখানে দুইটি অপশন থাকে- (১)  নুতন রেজিষ্ট্রশন এবং (২) পুনরায় রেজিষ্ট্রশন। করদাতা ধরণ অনুযায়ী যেকোন একটিতে ক্লিক করবেন।

নুতন রেজিষ্ট্রশন তৈরির নিয়মঃ

যে সকল করদাতা একেবারে নুতন অর্থাৎ যাদের পুরাতন টিআইএন নম্বর নেই, তাদেরকে অবশ্যই “new registration” অপশনটি নির্ধারণ করে ১২ ডিজিটের টিআইএন নম্বর নিতে হবে।

পুনরায় রেজিষ্ট্রশন তৈরির নিয়মঃ

যে সকল করদাতাদের বর্তমানে ১০ ডিজিটের পুরানো  টিআইএন নম্বর রয়েছে তাদের ১২ ডিজিটের টিআইএন নম্বর নিতে হবে।

আয়ের প্রধান উৎসঃ

এই অপশনে করদাতাকে আয়ের অংশটি নির্ধারণ করতে হবে। এখানে ৪টি অপশন থাকে।

পেশাঃ

যে সকল করদাতা ডাক্তার, প্রকৌশলী, আইনজীবী তারা “profession” অপশনটি ক্লিক করবেন।

ব্যবসাঃ

যে সকল করদাতা ব্যবসার সাথে জড়িত তারা “business” অপশনটি ক্লিক করবেন।

অন্যান্যঃ

যে সকল করদাতা চাকুরি, পেশা, ব্যবসা ইত্যাদি কোন কাজের সাথে জড়িত নন তারা “other” অপশনটি ক্লিক করবেন।

একইভাবে এই অপশনগুলো থেকে আয়ের সঠিক উৎসটি নির্বাচন করতে হবে; সম্পন্ন হলে “Service Location and Type of Employees” এই দুইটি অপশন দেখা যাবে।

কর্মক্ষেত্রঃ

করদাতার কর্মক্ষেত্রের স্থান নির্ধারণ করতে গেলে “Service Location”-এ দেশের ৬৪ টি জেলার নাম পাওয়া যাবে। সেখান থেকে করদাতার কর্মস্থল নির্বাচন করতে হবে।

কর্মের ধরণঃ

এরপর করদাতার কাজের ধরণ নির্ধারণ করতে হবে। পরে “Go To Next” বাটনে ক্লিক করতে হবে।

আরও যে সকল তথ্যের প্রয়োজনঃ এই অপশনটিতে নাম, জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর, জন্ম তারিখ ইত্যাদি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে এবং অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী।

ঠিকানা সম্পর্কিত কিছু কথাঃ

এই অংশে করদাতাকে তার বর্তমান, স্থায়ী এবং অন্য কোন ঠিকানা চাইলে তা পূরণ করতে হবে। বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা একই হলে save as current address বক্সে চাপ দিতে হবে। তবে করদাতার ইচ্ছানুযায়ী অফিস বা  অন্য ঠিকানাও দেওয়া যেতে পারে। Address Information সংক্রান্ত তথ্য গুলো সঠিক ভাবে পূরণের পর go to next বাটনে ক্লিক করতে হবে।

আরও কিছু তথ্যঃ

এই অপশনে করদাতার প্রদত্ত তথ্যগুলো সঠিক হয়েছে কিনা তা দেখা যাবে। ভুল তথ্য সংশোধনের জন্য back previous বাটনে ক্লিক করতে হবে।

সব কাজ শেষ হলে submit application বাটনে  ক্লিক করতে হবে। আর তখনই টিআইএন নম্বর এবং সার্টিফিকেট তৈরি হবে। সব ধাপের শেষে টিআইএন সার্টিফিকেটটি দেখতে view certificate বাটনে  ক্লিক করলে সার্টিফিকেটটি দেখা যাবে।

এভাবে সম্পন্ন হবে টিআইএন রেজিস্ট্রেশন কিংবা রি-রেজিস্ট্রেশন।