বর্তমানে রাজশাহী শহরের “বাটার মোড়” হিসাবে পরিচিত মোড়টির পূর্বে নাম ছিল “মোহনলালের মোড়”। বিগত শতাব্দীর বিশ ও ত্রিশের দশকে শহরের ধনী মানুষদের একজন মোহনলাল রায় ছিলেন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। তার পূর্ব পুরুষেরা এদেশে এসেছিলেন ভারতের উত্তর প্রদেশ থেকে । মালোপাড়া টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ভবনের বিপরীত দিকের (দক্ষিণে) বেশ বড় একটি স্থান জুড়ে ছিল তার বসতবাড়ী। শক্তি ঔষধালয়ের দক্ষিণে রুপালী ব্যাংক এবং পশ্চিমে ইন্টারন্যাশনাল ইলেকট্রিক নামে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দোকান- এই বিরাট অংশটুকু নিয়ে ছিল মোহনলালের বসতবাড়ী এবং রাস্তা সংলগ্ন দোকানঘর। এছাড়াও বর্তমান মুক্তা ইন্টারন্যাশনাল হোটেল ও এর দক্ষিণে ইসলামী ইন্সুরেন্স এর ভবন এগুলোর স্বত্বধিকারী ছিলেন মোহনলাল।

তিনি এই শহরের হার্ডওয়ার ব্যবসার পথিকৃত ছিলেন। সে আমলে চুন-সুরকী ছিল পাকা ভবন নির্মাণের প্রধান উপকরণ। তিনি কয়লা ও চুন আমদানি করতেন বিহার থেকে। বর্তমানে মুক্তা হোটেলের পেছনের অংশে ছিল তাঁর কয়লা ও চুনের আড়ৎ এছাড়াও তাঁর বেশ কয়েকটি ইটের ভাটা ছিল। মোহনলালের জীবিত অবস্তাতেই এই মোড়টির নাম হয় মোহনলালের মোড়। মোহনলাল রায় ১৯৩৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পরও বহুদিন এই মোড়টি মোহন-লালের মোড় হিসাবে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে বাটা কোম্পানির একটি দোকান প্রতিষ্ঠিত হয় এই মোড়ের পার্শ্বে। ধীরে ধীরে মোড়টি মোহনলালের মোড় থেকে বাটার মোড় নামে পরিচিতি পায়।
[সূত্রঃ শহর রাজশাহীর আদিপর্ব, মাহবুব সিদ্দিকী]